সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি ।।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সাতপোয়া ইউপির চর সরিষাবাড়ী গ্রাম-ঝালুপাড়া ঘাটকে বিচ্ছিন্ন করেছে যমুনা নদীর একটি শাখা নদী। নদীতে সেতু ও দুই তীরে পাকা সড়ক না থাকায় চলাচলের দুর্ভোগে পড়েন দুই পাড়ের ২০ হাজার মানুষ। সেই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে নিজেদের অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করছেন কাঠের সাঁকো।
২ এপ্রিল থেকে স্থানীয়রা ৩২০ ফুট দীর্ঘ কাঠের সাঁকো নির্মাণ শুরু করেছেন। এ সাঁকো নির্মাণে প্রায় সাত শতাধিক গাছের পিলার লাগবে। এরপর উপরে চলাচল করতে প্রচুর কাঠ বসানো হবে। বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ শেষ করার লক্ষ্যে কাজ করছেন তারা। ব্যবহার করছেন নিজেদের বাড়ির আঙিনা বা বাগানের ইউক্যালিপটাস গাছ।
সাঁকোর অন্যতম উদ্যোক্তা আব্দুল আজিজ বলেন, উপজেলার চর সরিষাবাড়ী, টাকুরিয়া, মালিপাড়া, মানিক পটল, বিন্যাফৈর ও কাজিপুর থানার কুমারিয়াবাড়ী, শালগ্রাম, শালদহ, চর সালালসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের ২০ হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র পথ এটি। সেতু ও ভালো সড়ক না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ১৫ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। এছাড়া মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে দুই কিলোমিটার সড়ক পার হতে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় নষ্ট হয়। গত বর্ষা মৌসুমে প্রসব ব্যথা নিয়ে নদী পারাপার না হতে পেরে দুই গর্ভবতী নারী মারা যান।
রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি মাস্টার সুরুজ্জামান বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমে এ সাঁকো নির্মাণ করলে আগামী বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই উপকার হবে। এ মৌসুমে শিক্ষার্থীরা নানা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করে।
রঘুনাথপুর বালিকা বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, এ সাঁকো নির্মাণ সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত। তবে স্থায়ীভাবে সেতুন নির্মাণ হলে হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হতো।
স্কুলছাত্র শিপন বলেন, বর্ষা মৌসুমের তিন মাস স্কুলে যেতে পারি না। এতে করে পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়। এই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ হলে অনেক উপকার হবে।
সাতপোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণাধীন সাঁকো দিয়ে গ্রামবাসীদের চলাচল করতে পারবেন। চর সরিষা বাড়ি থেকে ঝালুপাড়া ঘাট পর্যন্ত সেতু ও চলাচলের সড়কের জন্য এমপি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মুরাদ হাসানের সহযোগিতা চাই।