কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ৪২ জনের নাম অনুমোদন দিলেন শেখ হাসিনা

Joynal Abdin
0
স.স.প্রতিদিন ডেস্ক ॥
এক বছর হয়ে গেছে ছাত্রলীগের এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় সাধারণত সর্বনিম্ন ২৭১ জন থেকে সর্বোচ্চ ৩০১ জনের। গত শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ৪২ জনের নাম চূড়ান্ত করেছেন। এই ৪২ জনের নাম যেকোনো সময় ঘোষণা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এটা অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী তিনদিনের সফরে ব্রুনেই যাচ্ছেন। তিনি সেখান থেকে দেশে ফেরার পর বাকি নামগুলো নিয়ে কাজ করবেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী সম্মেলন হয় ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে। এর প্রায় দেড় মাস পর গত বছর ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ওই দিন গণভবন থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদের নাম ঘোষণা করেন। একই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগরীর দুটি ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। তারপর প্রায় এক বছর হতে চললেও ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি করতে পারেনি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। সর্বশেষ গত সোমবার আওয়ামী লীগের চার কেন্দ্রীয় নেতাকে গণভবনে ডেকে রোববারের মধ্যে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার নির্দেশ দেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ওই কেন্দ্রীয় নেতারা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা শোভন ও রাব্বানীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পৌঁছে দেন। গত বৃহস্পতিবার শোভন ও রাব্বানীকে গণভবনে ডেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি আবার একই নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এসব তথ্য জানান। তারা আরো জানান, শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও গত দুই দিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টানা বৈঠক করেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেননি। এখন পর্যন্ত মাত্র ৪২ জনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। অবশ্য এ ৪২ জনের নামের তালিকা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডই ঠিক করে দিয়েছে। ওই ৪২ জনের নামের তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। তারা হলেন- গোপালগঞ্জের সায়েম খান, বরিশালের শেখ ওয়ালী অসিদ ইনান, ভোলার ইয়াজ আল রিয়াদ, কিশোরগঞ্জের ইশাত তাসমিয়া ইরা, টাঙ্গাইলের মেহেদী হাসান রনি, বগুড়ার রাকিব হাসান রাকিব, গাজীপুরের রাকিব আহমেদ রাসেল, বরিশালের আল নাহিয়ান খান জয়, ময়মনসিংহের মোঃ সোহান খান, গোপালগঞ্জের আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মাগুরার শাওকতুল হাসান সৈকত, গাইবান্ধার আল মামুন, ফরিদপুরের মোঃ রনি, নওগাঁর আপেল মাহমুদ, বরিশালের সোলায়মান ইসলাম মুন্না, পিরোজপুরের মামুন বিন সত্তার, ফরিদপুরের বিদ্যুৎ শাহরিয়ার কবির, সুনামগঞ্জের মাহবুব খান, মুন্সীগঞ্জের সারমিন ইতি, বরগুনার আরিফুজ্জামান ইমরান, ঝালকাঠির ইমরান জমাদ্দার, মাগুরার বেনজীর হোসেন নিশি, কুষ্টিয়ার রকিবুল ইসলাম বাঁধন, শরীয়তপুরের ফুয়াদ হোসেন শাহদাত, পিরোজপুরের বরকত হোসেন হাওলাদার, পাবনার আবু সাইদ কনক, রংপুরের হায়দার হোসেন জিতু, নোয়াখালীর খাজা যোয়ের সুজন, কিশোরগঞ্জের মোবারক হোসেন, বরিশালের খাদিমুল বাশার জয়, বুয়েটের শুভ্র জ্যোতি শিকদার, ময়মনসিংহের মিয়া মোহাম্মদ রুবেল, মাসুদ লিবন, রাজশাহীর শ্রাবণী শায়লা, নাহিদ হাসান শাহিন, গোপালগঞ্জের মহিউদ্দিন, শরীয়তপুরের শাহাদাত হোসেন, ইসরাত সাদিয়া খান মিলি, মাহমুদুল রহমান মিঠু, তামান্না তাসনিম তমা, আসিকুর রহমান রাজীব ও পরশ রহমান। তাদের নাম চূড়ান্ত হলেও কাকে কোন পদ দেওয়া হবে তা নিশ্চিত হয়নি। তাদের বেশিরভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। অল্পসংখ্যক অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের। দুই বছর মেয়াদি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ২৭১ বা ৩০১ যত সদস্যেরই হোক না কেন, এই ৪২ জন ছাড়া বাকি কারো নামই চূড়ান্ত করতে পারেননি ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের দুই সদস্য ও ছাত্রলীগের দুই নেতা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার জন্য শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে অমিল থাকার কারণে তা হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে শেখ হাসিনা দ্রুত ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ওই নির্দেশ দেন। এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, সভাপতি কারো নাম প্রস্তাব করলে মানছেন না সাধারণ সম্পাদক। আবার সাধারণ সম্পাদক কারও নাম প্রস্তাব করলে তা মানছেন না সভাপতি। এ অবস্থায় কমিটি ঘোষণা করতে আরো কয়েক দিন লেগে যেতে পারে। ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা বলেন, শোভনের পক্ষ থেকে কিছু নাম চূড়ান্ত করা হয়ে গেছে। কিন্তু রাব্বানীর পক্ষ থেকে নামগুলো মেনে নেওয়া হচ্ছে না এবং রাব্বানী চূড়ান্ত করে কারও নামও দিচ্ছেন না। ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশমতো দ্রুত সময়ে কমিটি হচ্ছে না। ছাত্রলীগের সাবেক ওই নেতা আরও বলেন, রাব্বানীর অসহযোগিতা থাকলে শোভন তার মতো করে একটি নামের তালিকা শেখ হাসিনার কাছে জমা দিয়ে আসবেন। পরে শেখ হাসিনাই নেবেন সিদ্ধান্ত। এ প্রসঙ্গে জানতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দুয়েক দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে। যদি না পারি সে ক্ষেত্রে এ মাসে অবশ্যই কমিটি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো অমিল নেই।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!