বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
বিশ্বব্যাপী নারীদের প্রতি যে অবজ্ঞা অবহেলা রয়েছে তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে নারীরা যেভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করার মত। যদিও সরকার তা মোকাবেলা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবুও নারীর স্বাধীনতা সঙ্কুচিত ও নারী নির্যাতনে ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে। তার আগে নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি জরুরী। নারীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হলে রাষ্ট্রের সব জায়গার আমূল পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে নারীরা।
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও নারীর নেতৃত্বের বিকাশ নিয়ে এভাবেই কথা বলেন ব্যারিস্টার তাসনিম রকিব। লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া ব্যারিস্টার তাসনিম রকিবের বাবার বাড়ি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার খেওয়ারচর গ্রামে। তার বাবা বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বেসরকারি দন্ত হাসপাতাল পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিকিৎসক রকিবুল হোসেন রুমী একজন প্রখ্যাত ডেন্টিস্ট। তাসনিম রকিব বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন সুনামধন্য আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি মানবসেবায় কাজ করছেন তিনি। তিনি রোটারী ক্লাব অব শান্তিনগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও অসংখ্য ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ও নামীদামী প্রতিষ্ঠানে লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও প্যানেল আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
তার স্বামী সরকারের খাদ্য বিভাগের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সম্প্রতি তার চাচা খেওয়ারচর গ্রামের নাজির হোসেনের বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে একান্তে কথা বলেন ব্যারিস্টার তাসনিম রকিব।
তিনি বলেন, আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সেবার মানসিকতার মনোভাব নিয়ে দাদা-বাবার এলাকার মানুষের মাঝে এসেছি। চারদিন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখেছি ব্রহ্মপুত্র নদ, নশানী নদী ঘেঁষা ও গারো পাহাড়ি এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের পরিকল্পনা ও নারী সমাজকে নিয়ে কাজ করার কথা বলেন তরুণ এই আইনজীবী।
তিনি জানান, বকশীগঞ্জ উপজেলা একটি দারিদ্র্য পীড়িত এলাকা। নদী ভাঙন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে এই এলাকার মানুষ দারিদ্রকে মোকাবেলা করে জীবনযাপন করছেন। দারিদ্র এলাকা হওয়ায় শিক্ষায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে নারীরা। পাশাপাশি নারীরা অর্থনৈতিকভাবেও পিছিয়ে আছে। যে কারণে নারী নির্যাতন, বাল্যবিয়ের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এই এলাকাতে। তাই তিনি নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। বৃদ্ধাশ্রম তৈরি নিয়ে ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সাথে মতবিনিময় করেছেন। স্থানীয় অসহায় নারী, কিশোরীদের বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে সহযোগিতা করার প্রত্যয় করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল আইনজীবী ব্যারিস্টার তাসনিম রকিব। একই সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্ব বিকাশের জন্য গ্রামে-গঞ্জে কাজ করার কথা বলেন।
শুধু তাই নয় শিশুদের বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অভিভাবক সমাবেশ, মাদক প্রতিরোধে সচেতনতা সভা করারও কথা বলেন তিনি।
সব মিলিয়ে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে নারী সমাজের জন্য কিছু করতে চান ব্যারিস্টার তাসনিম রকিব। এ জন্য তিনি সাংবাদিক, সুধীমহল, জনপ্রতিনিধি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।