করোনায় ভোক্তার আয় কমে ব্যয় বেড়েছে। এর মধ্যে আয়ের বেশির ভাগ টাকা খরচ হচ্ছে খাদ্যপণ্য কিনতে। তাই তাদের প্রত্যাশা ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে পণ্যের দাম কমবে। সে মোতাবেক সরকারের পক্ষ থেকেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়নি। তবে বাজারে চিত্র পুরোই উলটো।
কর আরোপ না করলেও বাজেট প্রস্তাবের কয়েক দিনের ব্যবধানে চাল-ডাল থকে শুরু করে আটা-ময়দা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডিম ও শিশুখাদ্য গুঁড়াদুধসহ ১৩টি নিত্যপণ্যের দাম রীতিমতো লাগামহীন। এমন পরিস্থিতিতে ‘রীতিমতো মাথায় হাত’ নিু আয় ও খেটে খাওয়া মানুষের।
অন্যদিকে বাজেট ঘোষণার পর মুড়ি, সাবান, সিলিন্ডার গ্যাস ইত্যাদি পণ্যের দাম কমার কথা থাকলেও কোনো পণ্যের দাম কমেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এগুলো আগের কেনা। ফলে আগের দামেই বিক্রি করছি। নতুন দামে যখন কিনব তখন নতুন দামে বিক্রি করব।
এদিকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র দৈনিক বাজার মূল্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসের ব্যবধানে ১৩ পণ্যের দাম বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি চাল সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। কেজিতে ময়দার দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটারে বেড়েছে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রতি কেজি ডালের সর্বোচ্চ দাম বাড়ানো হয়েছে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। দেশি পেঁয়াজে মাসের ব্যবধানে দাম বাড়েছে কেজিতে ১৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। রসুন মাসের ব্যবধানে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ১৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দারুচিনি ৪ দশমিক ৯৪, রুই মাছ ৯ দশমিক শূন্য ৯, গুঁড়াদুধ শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ দাম বেড়েছে। এছাড়া মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত লবণের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। প্রতি হালি (চার পিস) ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
জানতে চাইলে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়া একেবারেই অযৌক্তিক। কারণ বাজেটে নতুন করে পণ্যের ওপর কর আরোপ করা হয়নি। বরং কিছু পণ্যের দাম কমানো হয়েছে। তার পরও ক্রেতা বাজারে তার সুফল পাচ্ছে না।
তাই বাজারের অসাধুদের রোধে কঠোর মনিটরিং করতে হবে। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি বাজারে কিছু পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে বাড়তির কারণে বেড়েছে। সেসব পণ্যের দাম কমাতে ও ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতায় আনতে আমদানি ক্ষেত্রে সব ধরনের ভ্যাট ট্যাক্সমুক্ত করতে হবে। এতে পণ্যের দাম কমবে। ক্যাবের পক্ষ থেকে আমরা অর্থমন্ত্রীকে এই বার্তা দিতে চাই।
বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, বাজারে পণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় রাখতে প্রতিদিন রাজধানীসহ সারা দেশে তদারকি পরিচালনা করা হচ্ছে। পাইকারি দামের তুলনায় খুচরা বাজারে দামের তারতম্য যাচাই করা হচ্ছে। এ সময় অনিয়ম পেলেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, সরবরাহ কমলে পণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। তবে ভোজ্যতেলের দিকে সরকারের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। কারণ এখানে বাজার সিন্ডিকেট কাজ করে। অল্প সংখ্যক লোক এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের গুদামে চালের মজুদ কমেছে, যে কারণে সংশ্লিষ্টরা চালের দাম বাড়িয়েছে। পাশাপাশি চালের দাম বাড়লে আটার দামও অসাধুরা বাড়িয়ে দেয়। সেদিকেও সরকারের লক্ষ রাখতে হবে। সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে।
রাজধানীর কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, নয়াবাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪-৬৫ টাকা। এই চাল বাজেটের আগে বা এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা।
একইভাবে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৪ টাকা, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকা। এছাড়া মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫১ টাকা, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৪৬ টাকা। চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কাওরান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সরকারি গুদামে চাল নেই। সরকারের মজুত কমেছে। মিলাররা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চালের মৌসুমেও দাম বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি বাজেটের অজুহাত দেখাচ্ছে। কিন্তু বাজেটে চালের দাম বাড়বে এমন কোনো প্রস্তাবনা আমরা লক্ষ করিনি। এটা তাদের কারসাজি।
নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার যুগান্তরকে বলেন, বাজারে চালের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে ধানের দাম বৃদ্ধি। বিগত বছরে কৃষকরা ধান উঠানোর আগেই কাটাই-মাড়াই করে হাটে বিক্রি করত। কিন্তু এ বছর সামান্য পরিমাণ ধান হাটে বিক্রি মজুত করে রেখেছে।
এতে চালের দাম বেড়েছে। চালের পাশাপাশি বাজেট ঘোষণার পর নতুন করে বেড়েছে আটা ও ময়দার দাম। ৩২ কেজি দরে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকা কেজিতে। বাজেটের আগে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া প্যাকেট ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা দরে। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩২-১৩৩ টাকা, যা বাজেটের আগে বা এক মাস আগে ১২৬-১২৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭৩০ টাকা, যা বাজেটের আগে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা, যা এক মাস আগে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের সঙ্গে কেজি প্রতি আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, যা আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ডালের মধ্যে ভালো মানের মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা কেজিতে। এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত লবণ ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে নয়াবাজারের মুদি বিক্রেতা মো. তুহিন যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। যে কারণে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে পাইকারি বাজারে পণ্যের সরবরাহের ঘাটতি নেই। তার পরও পাইকাররা বাড়তি দরে বিক্রি করছে। বিক্রেতারা বাজেটের অজুহাত খোঁজে।
সরকার দাম না বাড়লেও সেটাই করেছে। ফলে খুচরা বাজারে বাড়তি দরেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। তবে কাওরান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়েনি। বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছিল। এখন তা আবার কমছে।
কর আরোপ না করলেও বাজেট প্রস্তাবের কয়েক দিনের ব্যবধানে চাল-ডাল থকে শুরু করে আটা-ময়দা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডিম ও শিশুখাদ্য গুঁড়াদুধসহ ১৩টি নিত্যপণ্যের দাম রীতিমতো লাগামহীন। এমন পরিস্থিতিতে ‘রীতিমতো মাথায় হাত’ নিু আয় ও খেটে খাওয়া মানুষের।
অন্যদিকে বাজেট ঘোষণার পর মুড়ি, সাবান, সিলিন্ডার গ্যাস ইত্যাদি পণ্যের দাম কমার কথা থাকলেও কোনো পণ্যের দাম কমেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এগুলো আগের কেনা। ফলে আগের দামেই বিক্রি করছি। নতুন দামে যখন কিনব তখন নতুন দামে বিক্রি করব।
এদিকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র দৈনিক বাজার মূল্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসের ব্যবধানে ১৩ পণ্যের দাম বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি চাল সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। কেজিতে ময়দার দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটারে বেড়েছে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রতি কেজি ডালের সর্বোচ্চ দাম বাড়ানো হয়েছে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। দেশি পেঁয়াজে মাসের ব্যবধানে দাম বাড়েছে কেজিতে ১৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। রসুন মাসের ব্যবধানে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ১৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দারুচিনি ৪ দশমিক ৯৪, রুই মাছ ৯ দশমিক শূন্য ৯, গুঁড়াদুধ শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ দাম বেড়েছে। এছাড়া মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত লবণের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। প্রতি হালি (চার পিস) ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
জানতে চাইলে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়া একেবারেই অযৌক্তিক। কারণ বাজেটে নতুন করে পণ্যের ওপর কর আরোপ করা হয়নি। বরং কিছু পণ্যের দাম কমানো হয়েছে। তার পরও ক্রেতা বাজারে তার সুফল পাচ্ছে না।
তাই বাজারের অসাধুদের রোধে কঠোর মনিটরিং করতে হবে। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি বাজারে কিছু পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে বাড়তির কারণে বেড়েছে। সেসব পণ্যের দাম কমাতে ও ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতায় আনতে আমদানি ক্ষেত্রে সব ধরনের ভ্যাট ট্যাক্সমুক্ত করতে হবে। এতে পণ্যের দাম কমবে। ক্যাবের পক্ষ থেকে আমরা অর্থমন্ত্রীকে এই বার্তা দিতে চাই।
বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, বাজারে পণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় রাখতে প্রতিদিন রাজধানীসহ সারা দেশে তদারকি পরিচালনা করা হচ্ছে। পাইকারি দামের তুলনায় খুচরা বাজারে দামের তারতম্য যাচাই করা হচ্ছে। এ সময় অনিয়ম পেলেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, সরবরাহ কমলে পণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। তবে ভোজ্যতেলের দিকে সরকারের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। কারণ এখানে বাজার সিন্ডিকেট কাজ করে। অল্প সংখ্যক লোক এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের গুদামে চালের মজুদ কমেছে, যে কারণে সংশ্লিষ্টরা চালের দাম বাড়িয়েছে। পাশাপাশি চালের দাম বাড়লে আটার দামও অসাধুরা বাড়িয়ে দেয়। সেদিকেও সরকারের লক্ষ রাখতে হবে। সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে।
রাজধানীর কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, নয়াবাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪-৬৫ টাকা। এই চাল বাজেটের আগে বা এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা।
একইভাবে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৪ টাকা, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকা। এছাড়া মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫১ টাকা, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৪৬ টাকা। চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কাওরান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সরকারি গুদামে চাল নেই। সরকারের মজুত কমেছে। মিলাররা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চালের মৌসুমেও দাম বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি বাজেটের অজুহাত দেখাচ্ছে। কিন্তু বাজেটে চালের দাম বাড়বে এমন কোনো প্রস্তাবনা আমরা লক্ষ করিনি। এটা তাদের কারসাজি।
নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার যুগান্তরকে বলেন, বাজারে চালের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে ধানের দাম বৃদ্ধি। বিগত বছরে কৃষকরা ধান উঠানোর আগেই কাটাই-মাড়াই করে হাটে বিক্রি করত। কিন্তু এ বছর সামান্য পরিমাণ ধান হাটে বিক্রি মজুত করে রেখেছে।
এতে চালের দাম বেড়েছে। চালের পাশাপাশি বাজেট ঘোষণার পর নতুন করে বেড়েছে আটা ও ময়দার দাম। ৩২ কেজি দরে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকা কেজিতে। বাজেটের আগে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া প্যাকেট ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা দরে। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩২-১৩৩ টাকা, যা বাজেটের আগে বা এক মাস আগে ১২৬-১২৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭৩০ টাকা, যা বাজেটের আগে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা, যা এক মাস আগে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের সঙ্গে কেজি প্রতি আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, যা আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ডালের মধ্যে ভালো মানের মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা কেজিতে। এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত লবণ ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে নয়াবাজারের মুদি বিক্রেতা মো. তুহিন যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। যে কারণে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে পাইকারি বাজারে পণ্যের সরবরাহের ঘাটতি নেই। তার পরও পাইকাররা বাড়তি দরে বিক্রি করছে। বিক্রেতারা বাজেটের অজুহাত খোঁজে।
সরকার দাম না বাড়লেও সেটাই করেছে। ফলে খুচরা বাজারে বাড়তি দরেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। তবে কাওরান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়েনি। বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছিল। এখন তা আবার কমছে।